মুসলিমরা পাশে থাকলে এরদোগান বিজয়ী হবেন -শেখ ইউসুফ আল-কারযাভী
সত্যিকারের মুসলিমরা পাশে থাকলে এরদোগান বিজয়ী হবেন -শেখ ইউসুফ আল-কারযাভী:
শেখ ইউসুফ আল-কারযাভী
|
মিশরের বিশিষ্ট ইসলামিক বিশেষজ্ঞ শেখ ইউসুফ আল-কারযাভী বলেছেন,তুরস্কের উন্নয়ন ঠেকানোর জন্য পশ্চিমা বিশ্ব বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে। International Union for Muslim Scholars এর চেয়ারম্যান আল-কারযাভী ৩ নভেম্বর শনিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অনুষ্ঠিত IUMS এর সাধারণ সভায় এসব কথা বলেন।
শেখ ইউসুফ আল-কারযাভী বলেন, তারা হয়ত তাদের ষড়যন্ত্রে সফল হয়ে যেতে পারে কিন্তু প্রেসিডেন্ট এরদোগান এবং তার ভাইদের উপর মহান আল্লাহর সমর্থন রয়েছে। তিনি আরো বলেন, যদি সত্যিকারের মুসলিমরা এরদোগানের পাশে থাকলে মহান আল্লাহ তায়ালা এরদোগানকে বিজয়ী করবেন। এই চেয়ারম্যান এসময় বলেন, ইসলামিক বিশ্ব বর্তমানে বিভিন্ন বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। এরদোগানের নেয়া তুরস্কের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পদক্ষেপের প্রশংসা করে আল-কারযাভী বলেন, “তুর্কিরা ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, কারণ তারা ইসলামিক জাতিসমূহকে রক্ষা করতে চায়।”
IUMS এর সাধারণ এই সভায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত ১,৫০০ জন ইসলামিক বিশেষজ্ঞ যোগ দিয়েছেন এবং তা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলমান থাকবে। এসময় IUMS এর নতুন চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি জেনেরাল, ডেপুটি এবং সাধারণ সদস্যদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আল-কারযাভী তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘খাসোগি বলেছিলেন তিনি কোনো বিরোধী ব্যক্তিত্ব নন, কিন্তু তারা তার কথা শোনেনি এবং তাকে হত্যা করেছে।’
‘খাসোগি যখন কনস্যুলেটে প্রবেশ করেছিলেন তখন তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হতে পারে এই ভয়ে ভীত ছিলেন। কিন্তু তিনি কখনো চিন্তা করতে পারেন নি যে, সেখানে এমন লোকজন থাকতে পারে যারা তাকে হত্যা করবে এবং তারা সত্যিই তাকে হত্যা করেছে।’- শেষে আল-কারযাভী এমনটি বলেন।
যে কারণে তুরস্ক ভ্রমণে আগ্রহী বিদেশি পর্যটকরা।
তুরস্ক ভ্রমণে বিদেশি পর্যটকদের আগ্রহ বাড়ছে। এ বছর শেষ হতে না হতেই ইতিমধ্যে মুসলিম প্রধান এ দেশটিতে ভ্রমণ করেছেন ৩ কোটি ২ লাখ বিদেশি পর্যটক। যা গতবারের তুলনায় ২৩ ভাগ বেশি। বুধবার তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদলু এজেন্সিকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান দেশটির পর্যটন মন্ত্রী মেহমেত নূরী এরসোরি। পর্যটন মন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি এ বছর তুরস্কের সব রেকর্ড ভেঙে পর্যটক সংখ্যা ৪ কোটি পেরিয়ে যাবে। আর বিগত দিনের সব ঘাটতিগুলোও এতে পুষিয়ে যাবে। সামুদ্রিক সৌন্দর্য ও সংস্কৃতি মুসলিম অধ্যুষিত তুরস্ককে বিশেষ অবস্থানে নিয়ে গেছে। ভ্রমণ পিয়াসুদের জন্য মনোরম এ দেশটি বরাবরই আকর্ষণীয় জায়গা।
তুর্কি মন্ত্রী বলেন, আমাদের সার্ভিস ও বিনিয়োগের কারণে পর্যটকরা আরও বেশি আকৃষ্ট হচ্ছেন। আর আমাদের বহুবছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কারণেও বিভিন্ন ধরনের পর্যটকরা এদেশে আসেন।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বের সর্ব বৃহৎ বিমানবন্দর ইস্তাম্বুল এয়ারপোর্টের কাজও শেষ পর্যায়ে। এটি উদ্বোধন হলে তুরস্কের পর্যটনের জন্য আরও সহায়ক হবে।
তুরস্কের সংস্কৃতি ও ইতিহাস
তুরস্কের সংস্কৃতি বৈচিত্র্যময়। গ্রিক, রোমান, ইসলামিক ও পশ্চিমা সংস্কৃতির মিশ্রণে তাদের একটি সংকর সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। অটোমান সম্রাটদের সময় থেকে তুরস্কে পশ্চিমা সংস্কৃতি প্রবেশ করে। ১৯২৩ সালে তুরস্ক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সময় সাংস্কৃতিক জগতের আধুনিকায়নে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয়। ললিতকলার বিভিন্ন শাখায় বিশেষ করে জাদুঘর, থিয়েটার, অপেরা হাউজ এবং অন্যান্য স্থাপত্যসহ বিভিন্ন শাখায় এসব বিনিয়োগ করা হয়।
তুরস্কের ইতিহাস দীর্ঘ ও ঘটনাবহুল। প্রাচীনকাল থেকে বহু বিচিত্র জাতি ও সংস্কৃতির লোক এলাকাটি দখল করেছে। ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে এখানে হিটাইটদের বাস ছিল। তাদের সময়েই এখানে প্রথম বড় শহর গড়ে ওঠে। এরপর এখানে ফ্রিজীয়, গ্রিক, পারসিক, রোমান এবং আরবদের আগমন ঘটে।
মধ্য এশিয়ার যাযাবর তুর্কি জাতির লোকেরা ১১শ শতকে দেশটি দখল করে এবং এখানে সেলজুক রাজবংশের পত্তন করে। তাদের শাসনের মাধ্যমেই এই অঞ্চলের জনগণ তুর্কি ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে যায়। ১৩শ শতকে মোঙ্গলদের আক্রমণে সেলজুক রাজত্বের পতন ঘটে। ১৩ শতকের শেষ দিকে এখানে অটোমান বা উসমানীয় সাম্রাজ্যের পত্তন হয়। এরা পরবর্তী ৬০০ বছর তুরস্ক শাসন করে। আর আনাতোলিয়া ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব ইউরোপ এবং উত্তর আফ্রিকার এক বিশাল এলাকা জুড়ে বিস্তৃতি লাভ করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ওই সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।
মুসলিমরা পাশে থাকলে এরদোগান বিজয়ী হবেন -শেখ ইউসুফ আল-কারযাভী
Reviewed by Khalilur Qaderi
on
November 10, 2018
Rating: