বিশ্বসেরা ১২ জন মুসলিম মনীষী
বিশ্বসেরা ১২ জন মুসলিম মনীষীর নাম সহ সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরা হলে। আশাকরি সবার ভালো লাগবে। যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
১। ইবনে সিনা:-
১। ইবনে সিনা:-
৯৮০ খ্রিস্টাব্দে বোখারা শহরে জন্মগ্রহণ করেন বিখ্যাত চিকিৎসাবিজ্ঞানী, দার্শনিক আবু আলী সিনা। বোখারা শহরটি সে সময় ছিল ইরানের অন্তর্ভুক্ত। ইবনে সিনা দর্শন, বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান থেকে শুরু করে যুক্তিবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, অঙ্ক ইত্যাদি চর্চা করেছেন।
তিনি মাত্র ১৬ বছর বয়সে সমকালীন জ্ঞানী-গুণী, চিকিৎসক ও মনীষীদের পড়িয়েছেন। ফলে সহজেই বোঝা যায় তিনি ছিলেন সে সময়কার সবচেয়ে বড় চিকিৎসক। কথিত আছে, ইবনে সিনা যখন ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়তেন তখন অমীমাংসিত প্রশ্নগুলো তার মানসপটে স্বপ্নের মতো ভাসত। তার জ্ঞানের দরজা খুলে যেত। ঘুম থেকে উঠে তিনি সমস্যার সমাধান করে ফেলতেন! একজন বিখ্যাত চিকিৎসক হিসেবে সর্বত্র তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি আল মুজমুয়া নামে একটি বিশ্বকোষ রচনা করেন। এর মধ্যে গণিত ছাড়া সব বিষয় লিপিবদ্ধ করেন। ইবনে সিনা পদার্থবিজ্ঞান, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, জ্যামিতি, গণিত, চিকিৎসাবিজ্ঞান, সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেন। তিনি তার সময়ে পৃথিবীর সেরা চিকিৎসক।
ইবনে সিনা |
২। আল বিরুনি:-
৩। আল বেতরুগি:-
পারস্যের মনীষী আবু রায়হান আল বিরুনি। তিনি জীবনের বেশির ভাগ সময়ই কাটিয়েছেন মধ্য এশিয়ায়। ২০ বছর বয়সে তিনি জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ শুরু করেন। তিন বছর ধরে গোটা পারস্য চষে বেড়ান এবং বিভিন্ন পণ্ডিতের অধীনে পড়ালেখা করে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞানার্জন করেন। ৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি জুরজানে (বর্তমানে ‘গুরগান’, উত্তর ইরানের একটি শহর) স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। জীবনের পরবর্তী ১০ বছর তিনি উত্তর ইরানের এই ছোট্ট শহরেই বসবাস করেন, নিজের গবেষণা চালিয়ে যান, বই লেখেন এবং জ্ঞানার্জনে রত থাকেন।
আল বিরুনি ভূবিদ্যার একজন পথিকৃৎ। তিনি শতাধিক বিভিন্ন ধরনের ধাতু ও রত্নপাথর সংগ্রহ করে সেগুলো পরীক্ষা করেন। একাদশ শতাব্দীতে আল বিরুনি তার বর্ণময় কর্ম ও গবেষণা জীবন চালিয়ে যান এবং বিভিন্ন বিষয়ের গবেষণায় নতুন নতুন ও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি প্রদান করেন— কীভাবে পৃথিবী এর কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান। স্থিতিবিদ্যা ও গতিবিদ্যাকে একীভূত করে বলবিদ্যা নামক গবেষণার নতুন ক্ষেত্রের প্রবর্তন করেন তিনি।
আল বিরুনি |
৩। আল বেতরুগি:-
নুর আদ-দীন ইবনে ইসহাক আল বেতরুগি। তিনি ইসলামের সোনালি যুগে মরক্কোয় জন্মগ্রহণ করেন। তার ব্যক্তিগত জীবনী খুব বেশি জানা যায়নি। তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ। তিনি ‘স্লেশিয়াল মোশন’ নিয়ে যুগান্তকারী মতবাদ দিয়েছিলেন। তার সীমাবদ্ধতা থাকার পরও তিনি প্লেনটারি মোশন নিয়ে নিজস্ব থিওরি প্রদান করেছিলেন; যা এখন ঠিক।
আল বেতরুগি |
৪। আল রাজি:-
আবুবকর মুহাম্মদ ইবন জাকারিয়া আল রাজি বা আল রাজি। তিনি ৮৪১ খ্রিস্টাব্দে ইরানের তেহরানে জন্মগ্রহণ করেন। রাজি ছিলেন একজন দক্ষ পারশিয়ান চিকিৎসক ও দার্শনিক। তিনি চিকিৎসাবিদ্যা, আল কেমি, পদার্থবিদ্যা ও অন্যান্য বিষয়ের ওপর ১৮৪টিরও বেশি বই লিখেছেন। তিনি সালফিউরিক অ্যাসিড আবিষ্কার করেন। তিনি ইথানল উৎপাদন, বিশোধন ও চিকিৎসায় এর ব্যবহার প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন। তিনি একজন বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ছিলেন। তিনি বহু দেশ ভ্রমণ করেন।
৫। ওমর খৈয়াম:-
অনেক ইতিহাসবিদের মতে, সুলতান মাহমুদের মৃত্যুর কিছু আগে ওমর খৈয়াম জন্মগ্রহণ করেন। ওমর খৈয়ামের শৈশবের কিছু সময় কেটেছে অধুনা আফগানিস্তানের বালখ শহরে। সেখানে তিনি খোরাসানের অন্যতম সেরা শিক্ষক হিসেবে বিবেচিত ইমাম মোয়াফেফ্ক নিশাপুরির শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। দিনের বেলায় জ্যামিতি ও বীজগণিত পড়ানো, সন্ধ্যায় মালিক শাহর দরবারে পরামর্শ প্রদান এবং রাতে জ্যোতির্বিজ্ঞানচর্চার পাশাপাশি জালালি বর্ষপঞ্জি সংশোধন— সবটাতে তার নিষ্ঠার কোনো কমতি ছিল না। জীবদ্দশায় ওমরের খ্যাতি ছিল গণিতবিদ হিসেবে। বীজগণিত দিয়েই নিজের গবেষণা জীবন শুরু করেন খৈয়াম। প্রথমেই তিনি অনুধাবন করেন প্রচলিত গ্রিক পদ্ধতিতে ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান সম্ভব নয়। তাই নতুন পদ্ধতি নিয়ে ভাবতে শুরু করেন ওমর। তিনি প্রথম উপবৃত্ত ও বৃত্তের ছেদকের সাহায্যে ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান করেন।
ওমরের আর একটি বড় অবদান ইউক্লিডের সমান্তরাল স্বীকার্যের সমালোচনা, যা পরবর্তী সময়ে অ-ইউক্লিডীয় জ্যামিতির সূচনা করে। ১০৭০ খ্রিস্টাব্দে তার পুস্তক মাকালাত ফি আল জার্ব আল মুকাবিলা প্রকাশিত হয়। এ পুস্তকে তিনি ঘাত হিসেবে সমীকরণের শ্রেণিকরণ করেন এবং দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধানের নিয়মাবলি লিপিবদ্ধ করেন। ওমর খৈয়াম জ্যোতির্বিদ হিসেবেও সমধিক পরিচিত।
৬। ইবনুন নাফিস:-
আবুবকর মুহাম্মদ ইবন জাকারিয়া আল রাজি বা আল রাজি। তিনি ৮৪১ খ্রিস্টাব্দে ইরানের তেহরানে জন্মগ্রহণ করেন। রাজি ছিলেন একজন দক্ষ পারশিয়ান চিকিৎসক ও দার্শনিক। তিনি চিকিৎসাবিদ্যা, আল কেমি, পদার্থবিদ্যা ও অন্যান্য বিষয়ের ওপর ১৮৪টিরও বেশি বই লিখেছেন। তিনি সালফিউরিক অ্যাসিড আবিষ্কার করেন। তিনি ইথানল উৎপাদন, বিশোধন ও চিকিৎসায় এর ব্যবহার প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন। তিনি একজন বিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ছিলেন। তিনি বহু দেশ ভ্রমণ করেন।
আল রাজি |
অনেক ইতিহাসবিদের মতে, সুলতান মাহমুদের মৃত্যুর কিছু আগে ওমর খৈয়াম জন্মগ্রহণ করেন। ওমর খৈয়ামের শৈশবের কিছু সময় কেটেছে অধুনা আফগানিস্তানের বালখ শহরে। সেখানে তিনি খোরাসানের অন্যতম সেরা শিক্ষক হিসেবে বিবেচিত ইমাম মোয়াফেফ্ক নিশাপুরির শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। দিনের বেলায় জ্যামিতি ও বীজগণিত পড়ানো, সন্ধ্যায় মালিক শাহর দরবারে পরামর্শ প্রদান এবং রাতে জ্যোতির্বিজ্ঞানচর্চার পাশাপাশি জালালি বর্ষপঞ্জি সংশোধন— সবটাতে তার নিষ্ঠার কোনো কমতি ছিল না। জীবদ্দশায় ওমরের খ্যাতি ছিল গণিতবিদ হিসেবে। বীজগণিত দিয়েই নিজের গবেষণা জীবন শুরু করেন খৈয়াম। প্রথমেই তিনি অনুধাবন করেন প্রচলিত গ্রিক পদ্ধতিতে ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান সম্ভব নয়। তাই নতুন পদ্ধতি নিয়ে ভাবতে শুরু করেন ওমর। তিনি প্রথম উপবৃত্ত ও বৃত্তের ছেদকের সাহায্যে ত্রিঘাত সমীকরণের সমাধান করেন।
ওমর খৈয়াম |
৬। ইবনুন নাফিস:-
চিকিৎসাবিজ্ঞান ও আইনশাস্ত্রে তার অবদান অবিস্মরণীয়। ইবনুন নাফিস মানবদেহে রক্তসঞ্চালন পদ্ধতি, ফুসফুসের সঠিক গঠন পদ্ধতি, শ্বাসনালি, হৃৎপিণ্ড, শরীরে শিরা-উপশিরায় বায়ু ও রক্তের প্রবাহ ইত্যাদি সম্পর্কে বিশ্বের জ্ঞানভাণ্ডারকে অবহিত করেন।
ইবনুন নাফিস |
তিনি মানবদেহে রক্ত চলাচল সম্পর্কে গ্যালেনের মতবাদের ভুল ধরিয়েছিলেন এবং এ সম্পর্কে নিজের মতবাদ সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন।
৭। শেখ সাদী:-
৭। শেখ সাদী:-
ফার্সি গদ্যের জনক মহাকবি । প্রথম দিকে তিনি কিশোরদের জন্য উপদেশমূলক গল্প ও কবিতা লিখতেন। গল্পে গল্পে তিনি শুনিয়েছেনশেখ সাদি সততার পুরস্কার কীভাবে পাওয়া যায়। কীভাবে বিনীতশীলিত হতে হয়। কীভাবে ন্যায়-অন্যায় বিবেচনা করতে হয়। এক কথায়, মানুষের সামগ্রিক বিকাশকে লক্ষ্য রেখেই তিনি গল্প, কবিতা রচনা করতেন। তা ছাড়া মানুষ হওয়ার বয়স কিন্তু কিশোর বয়স থেকেই। এই বয়সে নিজের নৈতিক চরিত্র ঠিক রাখার দিকনির্দেশনা পাওয়া যায় শেখ সাদির রচনায়। তার লেখায় জ্ঞানী, গুণী মনীষীদের পবিত্র জীবনাচরণ উদাহরণ হয়েছে। আরবি কবিতা ও প্রবাদ বাক্য ছাড়াও তার লেখায় যথেষ্ট পরিমাণে পবিত্র কোরআন, হাদিসের উদ্ধৃতি লক্ষ করার মতো। শেখ সাদির লেখা জনপ্রিয় ‘কাশিদা’ তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে গেছে। শেখ সাদির পুরো নাম আবু মুহাম্মদ মোশাররফ উদ্দিন বিন মোসলেহ উদ্দিন আবদুল্লাহ সাদি সিরাজি। তিনি ইরানের সুপ্রসিদ্ধ ‘সিরাজ’ নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন।
শেখ সাদি |
শেখ সাদি রচিত একাধিক কাব্যগ্রন্থের মধ্যে ‘গুলিস্তাঁ ও বুস্তাঁ’ নামক গ্রন্থ দুটি অন্যতম। গ্রন্থ দুটি বহু ভাষায় অনূদিত হয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গদ্য ও পদ্য মিশ্রিত এই গ্রন্থ এখনো অমর হয়ে আছে বিশ্ব সাহিত্য ভাণ্ডারে। গ্রন্থ দুটি অনবদ্য পঙিক্ত সৃষ্টিতে যেমন সফল তেমনিভাবে সফল অভিভাবকত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে।
৮। জাকির ইবনে হাইয়ান:-
বিজ্ঞানী জাবির ইবনে হাইয়ান আল-আজদি আস সুফি আল-ওমাবি। আরবের দক্ষিণাংশের বাসিন্দা আজদি গোত্রের হাইয়ান ছিলেন তার পিতা। চিকিৎসক পিতার সন্তান হলেও সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে উমাইয়া খলিফা তার পিতাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করলে বাল্যকালে তিনি চরম দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হন। শৈশবে কুফায় বসবাস করলেও পিতার মৃত্যুর পর তিনি দক্ষিণ আরবে স্বগোত্রে ফিরে আসেন। কুফায় বসবাসের সময় তিনি রসায়নশাস্ত্র গবেষণায় বিশেষ মনোযোগী হন। ওই পরিপ্রেক্ষিতে কুফায় একটি রসায়ন গবেষণাগারও প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলিম ইতিহাসবিদরা ওই গবেষণাগারকে পৃথিবীর প্রথম রসায়নাগার বলে অভিহিত করেছেন।
পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে রসায়নের প্রাথমিক প্রক্রিয়াগুলো চর্চা করার উপায় উদ্ভাবন করেন। রসায়নশাস্ত্রের পাশাপাশি তিনি চিকিৎসা, খনিজ পদার্থ বিশেষত পাথর, দর্শন, যুদ্ধবিদ্যা, জ্যামিতি, জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে অবদান রাখেন। তিনি প্রায় ২ হাজার বই রচনা করেন। এর মধ্যে চিকিৎসা বিষয়ে বই প্রায় ৫০০।
৯। আল বাত্তানি:-
৮। জাকির ইবনে হাইয়ান:-
বিজ্ঞানী জাবির ইবনে হাইয়ান আল-আজদি আস সুফি আল-ওমাবি। আরবের দক্ষিণাংশের বাসিন্দা আজদি গোত্রের হাইয়ান ছিলেন তার পিতা। চিকিৎসক পিতার সন্তান হলেও সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে উমাইয়া খলিফা তার পিতাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করলে বাল্যকালে তিনি চরম দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হন। শৈশবে কুফায় বসবাস করলেও পিতার মৃত্যুর পর তিনি দক্ষিণ আরবে স্বগোত্রে ফিরে আসেন। কুফায় বসবাসের সময় তিনি রসায়নশাস্ত্র গবেষণায় বিশেষ মনোযোগী হন। ওই পরিপ্রেক্ষিতে কুফায় একটি রসায়ন গবেষণাগারও প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলিম ইতিহাসবিদরা ওই গবেষণাগারকে পৃথিবীর প্রথম রসায়নাগার বলে অভিহিত করেছেন।
জাকির ইবনে হাইয়ান |
পৃথিবীর ইতিহাসে তিনিই প্রথম বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে রসায়নের প্রাথমিক প্রক্রিয়াগুলো চর্চা করার উপায় উদ্ভাবন করেন। রসায়নশাস্ত্রের পাশাপাশি তিনি চিকিৎসা, খনিজ পদার্থ বিশেষত পাথর, দর্শন, যুদ্ধবিদ্যা, জ্যামিতি, জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে অবদান রাখেন। তিনি প্রায় ২ হাজার বই রচনা করেন। এর মধ্যে চিকিৎসা বিষয়ে বই প্রায় ৫০০।
৯। আল বাত্তানি:-
৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে মেসোপটেমিয়ার অন্তর্গত বাত্তান নামক স্থানে আল বাত্তানি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন অঙ্কশাস্ত্রবিদ ও জ্যোতির্বিদ। তিনিই সর্বপ্রথম নির্ভুল পরিমাপ করে দেখিয়েছিলেন যে, এক সৌর বছর ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে হয়। তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন, সূর্যের আপাত ব্যাসার্ধ বাড়ে ও কমে। সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ সম্পর্কেও তার বক্তব্য ছিল সুস্পষ্ট। আল বাত্তানি তার নিজস্ব উদ্ভাবিত যন্ত্র দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন যে সূর্য তার নিজস্ব কক্ষপথে গতিশীল।
এই মহান মনীষী ৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ৭২ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন। আল বাত্তানি ছিলেন একজন মশহুর জ্যোতির্বিদ ও গণিতজ্ঞ। তিনি জ্যোতির্বিদ্যাচর্চার জন্য নিজস্ব মানমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বহু বছর ধরে জ্যোতির্বিদ্যায় প্রচলিত ভুলগুলো সংশোধন করে এই শাখার অনেক সংস্কার ও উন্নতিসাধন করেন। পাশ্চাত্য ইতিহাসবিদরা তাকে উল্লেখ করেছেন ‘আল বাতেজনিয়াজ’, ‘আল বাতেজনি’, ‘আল বাতেনিয়াজ’ ইত্যাদি নামে। তাই তার পরিচয় অনেকটাই ইতিহাসে হারিয়ে যেতে বসেছে।
আল বাত্তানি |
এই মহান মনীষী ৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ৭২ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন। আল বাত্তানি ছিলেন একজন মশহুর জ্যোতির্বিদ ও গণিতজ্ঞ। তিনি জ্যোতির্বিদ্যাচর্চার জন্য নিজস্ব মানমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বহু বছর ধরে জ্যোতির্বিদ্যায় প্রচলিত ভুলগুলো সংশোধন করে এই শাখার অনেক সংস্কার ও উন্নতিসাধন করেন। পাশ্চাত্য ইতিহাসবিদরা তাকে উল্লেখ করেছেন ‘আল বাতেজনিয়াজ’, ‘আল বাতেজনি’, ‘আল বাতেনিয়াজ’ ইত্যাদি নামে। তাই তার পরিচয় অনেকটাই ইতিহাসে হারিয়ে যেতে বসেছে।
১০। আল ফারাবি:-
বিজ্ঞানী ও দার্শনিক আল ফারাবির আসল নাম আবু নাসের মুহাম্মদ ইবনে ফারাখ আল ফারাবি। আল ফারাবির পিতা ছিলেন উচ্চশিক্ষিত ও সেনাবাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তার পূর্বপুরুষরা ছিলেন পারস্যের অধিবাসী। ইসলাম গ্রহণ ও রাজনৈতিক কারণে তার পূর্বপুরুষরা পারস্য ত্যাগ করে তুর্কিস্তানে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় ফারাবায়। সেখানে কয়েক বছর শিক্ষালাভের পর শিক্ষার উদ্দেশ্যে চলে যান বোখারায়। এর পর উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য তিনি গমন করেন বাগদাদে। সেখানে তিনি সুদীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর অধ্যয়ন ও গবেষণা করেন। জ্ঞানের অন্বেষণে তিনি ছুটে গিয়েছেন দামেস্ক, মিসর এবং দেশ-বিদেশের আরও বহু স্থানে।
আল ফারাবি |
পদার্থবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, দর্শন, যুক্তিশাস্ত্র, গণিতশাস্ত্র, চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রভৃতিতে তার অবদান ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে বিজ্ঞান ও দর্শনে তার অবদান ছিল সর্বাধিক। পদার্থবিজ্ঞানে তিনিই ‘শূন্যতার’ অবস্থান প্রমাণ করেছিলেন। দার্শনিক হিসেবে ছিলেন নিয় প্লেটনিস্টদের পর্যায়ে বিবেচিত।
১১। ইবনে হাইসাম:-
১১। ইবনে হাইসাম:-
প্রখ্যাত পদার্থবিদ, জ্যোতির্বিদ, প্রকৌশলী, গণিতবিদ, চিকিৎসাবিদ, দার্শনিক, মনোবিজ্ঞানী, আবু আলী আল হাসান ইবনে আল হাসান আল ইবনে হাইসাম। তিনি বসরায় জন্মগ্রহণ করায় আল বসরি নামেও পরিচিত। আলোকবিজ্ঞানে অসামান্য সংযোজন ‘কিতাবুল মানাজির’-এর ১৫-১৬ অধ্যায়ে জ্যোতির্বিদ্যার আলোচনা রেখেছেন। এ ছাড়া তার ‘মিজান আল-হিকমাহ’ এবং ‘মাককাল ফি দ্য আল-কামার’ গ্রন্থদ্বয়ে তিনি সর্বপ্রথম গাণিতিক জ্যোতির্বিদ্যা ও পদার্থবিদ্যার সমন্বয় সাধনের চেষ্টা চালান।
ইবনে হাইসাম |
১২। মুসা আল খাওয়ারিজমি:-
পুরো নাম আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে মুসা আল খাওয়ারিজমি। মধ্য এশিয়ার দীর্ঘতম এবং আরব সাগরে পতিত আমু দরিয়ার কাছে একটি দ্বীপের নিকটে খাওয়ারিজম নামক শহরে আনুমানিক ৭৮০ খ্রিস্টাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাটিগণিত, বীজগণিত, ভূগোল, জ্যোতির্বিজ্ঞান, জ্যামিতিতে প্রভূত ভূমিকা রাখেন। মূলত বীজগণিতের জন্যই তিনি সবচেয়ে আলোচিত হন। তার ‘আল জাবর ওয়াল মুকাবিলা’ বই থেকে জানা যায়, তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিম। খলিফা মামুনের বিশাল লাইব্রেরিতে আল খাওয়ারিজমি চাকরি গ্রহণ করেন।
মুসা আল খাওয়ারিজমি |
এখানেই সম্ভবত তিনি বিজ্ঞানের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। অসীম ধৈর্যসহকারে অধ্যয়ন করে তিনি বিজ্ঞানের যাবতীয় বিষয়ের সঙ্গে পরিচিতি লাভ করেন। তিনি ছিলেন একজন জগদ্বিখ্যাত গণিতবিদ। তার সময়ের গণিতের জ্ঞানকে তিনি এক অভাবনীয় সমৃদ্ধতর পর্যায়ে নিয়ে তোলেন। একজন গণিতবিদ হওয়ার পাশাপাশি ছিলেন একজন উল্লেখযোগ্য জ্যোতির্বিদ। ভূগোল বিষয়ে তার প্রজ্ঞা উৎকর্ষতাকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। তিনি ছিলেন বীজগণিত তথা অ্যালজেবরার জনক। তিনি প্রথম তার একটি বইয়ে এই অ্যালজেবরার নাম উল্লেখ করেন। বইটির নাম হলো ‘আল জাবর ওয়াল মুকাবিলা’। তিনি বিজ্ঞানবিষয়ক বহু গ্রিক ও ভারতীয় গ্রন্থ আরবিতে অনুবাদ করেন।
পাটিগণিত বিষয়ে তিনি একটি বই রচনা করেন, যা পরে ল্যাটিন ভাষায় অনূদিত হয়। তার হাতেই বীজগণিত পরে আরও সমৃদ্ধতর হয়। বর্তমান যুগ পর্যন্ত গণিতবিদ্যায় যে উন্নয়ন এবং এর সহায়তায় বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যে উন্নতি ও আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে তার মূলে রয়েছে আল খাওয়ারিজমির উদ্ভাবিত গণিতবিষয়ক নীতিমালারই বেশি অবদান। তার রচিত বই ‘আল জাবর ওয়াল মুকাবিলা’ থেকে বীজগণিতের ইংরেজি নাম অ্যালজেবরা উৎপত্তি লাভ করে। (বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকা থেকে সংগ্রহিত)
পাটিগণিত বিষয়ে তিনি একটি বই রচনা করেন, যা পরে ল্যাটিন ভাষায় অনূদিত হয়। তার হাতেই বীজগণিত পরে আরও সমৃদ্ধতর হয়। বর্তমান যুগ পর্যন্ত গণিতবিদ্যায় যে উন্নয়ন এবং এর সহায়তায় বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় যে উন্নতি ও আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে তার মূলে রয়েছে আল খাওয়ারিজমির উদ্ভাবিত গণিতবিষয়ক নীতিমালারই বেশি অবদান। তার রচিত বই ‘আল জাবর ওয়াল মুকাবিলা’ থেকে বীজগণিতের ইংরেজি নাম অ্যালজেবরা উৎপত্তি লাভ করে। (বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকা থেকে সংগ্রহিত)
বিশ্বসেরা ১২ জন মুসলিম মনীষী
Reviewed by Tottho Projukti
on
October 07, 2018
Rating: