দিরিলিস আরতুগ্রুল বাংলা রিভিউ
দিরিলিস আরতুগ্রুল রিভিউ দিয়েছেন মিহির মিশকাত
রিভিউঃ দিরিলিস আরতুগ্রুল
দিরিলিসের শুরু থেকে শেষ অব্দি পুরাটাই আপনার ভালো লাগবে, এ সিরিয়াল না দেখা মানে অনেক্কিছুই মিস। তাই একটু বলে নিচ্ছি, আমি চাইলে খুব সংক্ষেপ করে লিখতে পারতাম,কিন্তু পারি নি।প্রত্যেকটি দৃশ্যই আপনার ভালো লাগবে এবং ভালো লাগতে আপনি বাধ্য। বকবকানি বাদ দিয়ে তাহলে শুরু করা যাক?
আল্লাহু আকবর (আল্লাহ মহান)শব্দদ্বয় উচ্চারণের মাধ্যমেই তুর্কি কায়ী গোত্রকে কেন্দ্র করে এ ঐতিহাসিক অ্যাডভেঞ্চার সিরিয়ালের শুরু। তার মানে বুঝে নেন, কতটা আল্লাহ ভীরুতা ছিল এই মহান গোত্রের মাঝে। এই জাতির অনেক কিছুই আপনার ভালো লাগবে একজন মুসলমান হিসেবে। আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস, ন্যায়বিচার, আতিথেয়তা, বংশীয় রীতিনীতি, কঠিন পরিস্থিতিতেও বেচে থাকার লড়াই, যুদ্ধ, সাহসিকতা, দৈর্য্যের পরীক্ষা, আল্লাহর উপর শেষ নিশ্বাস অব্দি অটল থাকা, সবই ভাল লাগবে। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগবে হাজারো দুঃখ-কষ্টের মাঝে সুখ খোঁজে পাওয়ার দৃশ্যগুলো।
ঐতিহাসিক অ্যাডভেঞ্চার টেলিভিশন ধারাবাহিক সিরিয়ালটি নিয়ে লিখতে চাইলে অনেক কিছুই লেখা যাবে, তবে আমি সেসব বিশাল সব পার্ট নিয়ে আমি লিখবো না, আমি লিখবো শুধুমাত্র আরতুগ্রুল ও হালিমা হাতুন এর নিখুঁত প্রেম ভালোবাসার অংশটি নিয়েই। আজকের তরুণরা হিন্দি মুভি-সিরিয়াল দেখে দেখে যেখানে নোংরামী শিখছে, সেখানে এ সিরিয়ালটি হতে পারে তাদের জন্য শিক্ষণীয়।বর্তমানে আমাদের যুব সমাজে প্রেম ভালোবাসার নামে যে নৈতিক বিপর্যয় বা নোংরামি দেখা যাচ্ছে হিন্দি সিরিয়াল কেন্দ্রিক হয়ে যাওয়ার কারণে। সেখান থেকে বের হতে এই রিভিউটা হতে পারে যতেস্ট। তবে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগবে হাজারো দুঃখ-কষ্টের মাঝে সুখ খোঁজে পাওয়ার দৃশ্যগুলো। অন্তত ভালোবাসা দেওয়া-নেওয়া যে কত নিখুঁত ও ভেজালমুক্ত হতে পারে, তার অনন্য উপমা এই সিরিয়ালটি।
তাহলে শুরু করা যাক,
আরতুগুল ও হালিমা সুলতানার ভালোবাসা কাহিনীঃ
কখন, কীভাবে, কোন মুহূর্তে ভালোবাসা মানুষকে ছুঁয়ে যায়, তা হয়তো সে নিজেও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারে না। কোন বাধায়, শাসনে তাকে আটকে রাখা যায় না, ভালোবাসা আসবেই। আর আরতুগুলের জীবনেও এসেছিল সে ভালবাসা। কোন শাসনই আরতুগুল-হালিমার ভালোবাসাকে আটকে রাখতে পারে নাই।
আর্তগোল ছিল সুলায়মান শাহের কনিষ্ঠ পুত্র এবং একজন সাহসী পুরুষ। সে প্রায়শই তার তিন ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে সাথে নিয়ে শিকারে বের হত। এরকম একদিন হরিণ শিকার করতে গেলে, তারা নাইটস টেম্পলার-এর নাইটদের বহনকৃত বন্দীদের মুখোমুখি হয়। তাদের উদ্ধার করে আরতুগুল। এরতুগরুল ও তার তিন বন্ধু সকল নাইটকে হত্যা করে হালিমা হাতুন নামের এক মেয়ে ও তার পরিবারকে উদ্ধার করে। তারা তাদের আসল পরিচয় না জেনেই নিজ গোত্রে নিয়ে আসে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে। হালিমা ও তার পরিবার সেলজুক সাম্রাজ্যের এক অভিজাত পরিবারের সদস্য এবং এরতুগরুল কিন্তু তাদের উদ্ধার না করলে প্রাণদণ্ড দেয়া হতো, যা পরে জানা যায়। প্রথমে ধরা পড়ার ভয়ে, তারা তাদের আসল পরিচয় গোপন রাখে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় হালিমাদেরকে।তাদের সেবা দিয়ে সুস্থ করা হয়।
যাই হোক, তাদের আগমনে কায়ি গোত্রে নতুন সমস্যা দেখা দেয়, সেলজুক সাম্রাজ্যকে যুদ্ধের হুমকি দিয়ে তাদের ফিরিয়ে দিতে বলা হয় এবং নাইট টেম্পলারসগণ প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। নতুন নতুন সমস্যা আর আশা-হতাশা নিয়ে দিন এগুতে থাকে।
হালিমা আরতুগুলের যাযাবর বসতিতে বসবাস করতে থাকে। আরতুগুল হালিমার কোন কিছুই না জেনে হালিমার প্রেমে পড়ে যায়, হালিমাও আরতুগুলের প্রেমে পড়ে যায়, কিন্তু কেউ কাউকে মুখে কিছুই বলে না। শুধু চোখের ভাষাই ছিল দু’জনের ভালোবাসা আদান প্রদানের প্রধান মাধ্যম। বলতে গেলে প্রথম দেখাতেই দুজনই একে অপরের প্রেমে পড়ে যায়। বলা যায় হরিণ শিখার করতে গিয়ে আরতুগুল হালিমাকেই শিকারে পেয়ে যায় আর হালিমার শিকারে পরিণত হয়।
হালিমা’রা বসতিতে থাকা শুরু করে, হালিমার অনেক ফ্রেন্ড সার্কেল হয়, এক বান্ধুবী হালিমাকে সাজগোজ করে দিলে হালিমাকে ঠিক পরীর মতো সুন্দর দেখায়। হালিমার চাহনী, আচার-ব্যাবহার সবই আরতুগুলকে মুগ্ধ করে। এককথায়, যেমন শিকারী তেমন শিকার।
আরতুগুলের কাছে হালিমা পরিচয় গোপন রাখে শুরুতে, পরে পরিচয় প্রকাশ করতে বাধ্য হয়।
যাই হোক, তাদের আগমনে কায়ি গোত্রে নতুন সমস্যা দেখা দেয়, তাদের ফিরিয়ে না দিলে যুদ্ধের হুমকি দিয়ে তাদের ফিরিয়ে দিতে বলা হয় এবং নাইট টেম্পলারসগণ প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। এ সব ঝামেলার মাঝে আরতুগুল নিজেকে সবসময় নিজেকে মোটিভেটেট করতো, এক আল্লাহর উপর সব সময় সাহস রাখত।নিজের সীদ্ধান্তে অটল থাকত, পুরা বংসকে নিয়ে বেশী ভাবতো এ সবের মাঝে আরতুগুল চলে যায় রাষ্ট্রের কাজে আলেপ্পো শহরে।
আরতুগুল-হালিমার মিষ্টি প্রেম শুরু হতে থাকে চোখে-চোখে, চাহনীতে, নিরবে। হালিমা আরতুগুলকে আলেপ্পো যাওয়ার আগে লুকিয়ে একটা গিফট দেয়, পরে আরতুগুল সেটা পেয়ে নিজেকে ভালোবাসায় আরো জড়িয়ে নেয়, আরতুগুল নিজের তরবারির সাথে লাগিয়ে রাখে হালিমার দেয়া উপহারটা। দুরে থাকলে বা দুরে গেলে যে ভালোবাসা বাড়ে সেটা গিফটগুলা সঙ্গে থাকলে তা মনে করিয়ে দেয়। চোখের চাহনী মনে স্মরণ করাসহ কত স্মৃতি মনের চোখে ভেসে উঠে, আর নাইবা বললাম। দৃশ্যগুলা দেখলে বুঝা যায় যে একটা জুটিতে কতটা সম্মান-প্রেম-ভালোবাসা থাকা উচিৎ, সবিই যে আছে এই এক সিরিয়ালে। আলেপ্পো শহরে যাওয়ার আগে বিদায় বেলায়-
চোখে চোখ রেখে আরতুগুল-হালিমার কথোপকথনঃ
হালিমা-শুনলাম,কোথাও নাকি যাচ্ছেন?
আরতুগুল- হুম, ফজরের নামাজের পরে রওয়ানা হবো।
হালিমা-সব তৈরি তাহলে?
আরতুগুল- হুম।সবসময় সবকিছুর জন্য তৈরি থাকি।
হালিমা- তাও ঠিক, অভ্যাস হয়ে গেলে সহজ হয়ে যায়।
আরতুগুল- অভ্যাস হয়ে যাওয়াটা সব সময় ভালো লাগে না।
কথাগুলা থেকে বুঝা যায়, দুজনেই প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন, চোখের আড়াল হোক কেউ তা চাচ্ছিল না। কেউ কাউকে মুখ খোলে প্রপোজও করে নাই, চোখের চাহনীতেই সব সুখ যেন খোঁজে পাচ্ছিল দুজনেই। আরতুগুলের ভালোবাসা পেয়ে তাবুতে কাটানো সময়গুলো যে স্বপ্নের মতো কাটছে তা হালিমা আরতুগুলকে আকার ইঙ্গিত দিয়ে বলে দেয়।
লুকিয়ে গিফট দেয়া শেষে, হালিমার চাওয়া ছিল ঠিক এরকম-
“রোধে যেন পুড়তে না হয়,
বৃষ্টিতে যেন ভিজতে না হয়,
মাঠিতে যেন পা পেলতে না হয়,
দ্রুত গিয়ে ফিরে আসুন আরতুগুল”।
আরতুগুলও হালিমাকে আশ্বস্ত করে এই বলে যে- তাহলে, বাতাসের গতিতে দ্রুত গিয়ে ফিরে আসবো। তোমাকে ফিরে পেতে চাই, হারাতে চাই না, (মনে মনে)
হালিমা- আল্লাহ জানেন, আপনি ফিরবেন কি না?আর ফিরলেও দেখা হবে কি না? (মনে মনে)
আরতুগুল- দিন রাত এক করে ফিরে আসবো তোমার কাছে হালিমা ।(মনে মনে)
আরতুগুলকে হারানোর ভয় যেমন হালিমার ছিল ঠিক তেমনি আরতুগুলেরও ছিল, বিদায় নিয়ে চলে যায় আরতুগুল, হালিমারা আরতুগুলদের বসতি থেকে পালাতে চাই ঝামেলা থেকে বাঁচতে।অনেক ঘটনা ঘটে যায়। শেষ অব্দি হালিমারা বসতিতে থেকে যায়।
আরতুগুলের বড় ভাইয়ের বউ চাচ্ছিল হালিমারা বসতি ছেড়ে চলে যাক, কারণ তার ছোট বোন গুকছে’কে আরতুগুলের সাথে বিয়ে দিতে চাচ্ছিল।তাই, ভাবি সব সময় হালিমাকে অপমান করতে থাকতো।
ঐদিকে আরতুগুল আলেপ্পোতে হালিমাকে মিস করতে থাকে, আর হালিমাও আরতুগুলকে মিস করতে থাকে। দুরে চলে গিয়েও যেন আরো কাছাকাছি।দূরত্ব ভালোবাসাকে আরো কাছে করে দিলো।
এদিকে শত ষড়যন্ত্র আর ঝামেলার মাঝে হালিমা বসতিতে নিজেকে বুদ্ধিমতি, চালাক মেয়ে হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে থাকে। আর আল্লাহর কাছে একটা জিনিস চাইতে থাকে সব সময়, বলা যায় প্রতি নিশ্বাসে।
কিছু দিন পরে আরতুগুল বসতিতে সফলভাবে ফিরে আসে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালন শেষে। প্রথমে এসেই দেখা করলো ভালোবাসার সাথে, সবার সামনে না, একাকী। যে দেখায় ছিল ভালোবাসা ফিরে পাওয়া। মধুর মিলন। এসেই যেন চমকে দিল ভালোবাসার হালিমাকে। যে সময় হালিমা আরতুগুলকে চোখ বন্ধ করে ভালোবাসার ক্ষণগুলো মিস করতেছিল, ঠিক সে সমইয়েই। আরতুগুল আলেপ্পো থেকে নিয়ে আসে এক চমৎকার উপহার। একটা আয়না, যে আয়নায় দুজনকেই এক ফ্রেমে দেখা যায়।দেখা যায় কত স্বপ্ন। দেখা যায় কত আবেগ আর ভালোবাসা।
এরই মধ্যে, আরতুগুল আর হালিমার ভালোবাসা বসতির অনেকেই জেনে গেছে, এমনকি আরতুগুলের মা বাবাও।বড় ভাইয়ের বউয়ের ছোট বোন গুকছে’কে বিয়ে করার জন্য মা-বাবা চাপ দিতে থাকে আরতুগুলকে। বাবাকে তো কিছু বলা যায় না তাই মাকে আরতুগুলের জবাব- যে চোখে আমি নিজের সুখ খোঁজে পেয়েছি তাকে কেমনে না বলি? দুনিয়ার সবইতো জানো মা, শুধু হ্রদয়ের কথাটাই জানো না।মা, আমি ঐ সুন্দর চোখের মায়া কেমনে ভুলে যাবো? যদি কখনো সাহস করে জিজ্ঞেস করি, হালিমা আমাকে চাই কি না? যদি হালিমাও আমাকে চাই বলে, আমি কিভাবে হালিমাকে আমার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত করবো? গরম করে নয় খুব ঠাণ্ডা মাথায় মাকে বুঝিয়ে দিল যে, আরতুগুল হালিমাকে যে কোন কিছুর বিনিময়ে চাই। বিয়ে করতে চাই অথচ হালিমাদের পরিচয়ই জানে না আরতুগুল। আরতুগুল শুধুই হালিমার চোখে খোজে পেয়েছে আরতুগুলের জন্য ভালোবাসা, যে ভালোবাসায় আরতুগুল পেয়েছে সবকিছু। সব কিছু মানে সবকিছু।
আরতুগুলের বড় ভাইয়ের বউ চাচ্ছিল ছোট বোনকে আরতুগুলের সাথে বিয়ে দিতে। তাই সুযোগ পেলেই আপমান করেই যাচ্ছিল হালিমাকে। মা-বাবা, ভাবি সবাই মিলে আরতুগুলের সাথে গুগছে’কে বিয়ে দিতে চাচ্ছে। এদিকে আরতুগুলের বাবা সুলেমান শাহও গুকছে’এর সাথে বিয়ের ঘোষণা দিয়ে দেয়। ঐদিকে আরতুগুলের ভাবি আর বোন খুশিতে নাচতে থাকে, যেন বাবার ঘোষণা মানেই বিয়ে হয়ে গেছে। এরই মাঝে আরতুগুল গুকছে’কে বোন সম্ভোধন করে সাফ জানিয়ে দেয় যে, সে যে শুধুই হালিমাকে চাই।
অথচ কেউ কাউক এখনো স্পর্শই করে নি, স্পর্শ হয়েছে শুধু মনে মনে।চোখে চোখে।
রাষ্ট্রীয় শত চাপেও যেন আরতুগুল নিজেকে ঐ হালিমার কাছেই সুখ খোঁজে পাই, যে হালিমার পরিচয় না জেনেই এত ভালোবেসেছে আরতুগুল।কঠিন এক মুহূর্তে হালিমা’রা পরিচয় প্রকাশ করতে বাধ্য হয়। প্রকাশ হয় হালিমা’রা বিখ্যাত সেলজুক বংসধর। হালিমা হলেন শাহজাদী। হালিমার পরিচয় প্রকাশ হওয়ার পরে সবাই স্যালুট/কুর্নিশ দেয়া শুরু করে।
হটাত, আরতুগুলের বড় ভাইকে গ্রেফতার করে। বিনিময়ে হালিমার বাবা আর ভাইকে চেয়ে বসে বিরোধী পক্ষ। তাই, হালিমার পরিচয় প্রকাশ হওয়ার পরে হালিমা নিজের পরিচয় গোপন করার ও কাউকে না বলে পালিয়ে যাওয়ার, তাবুতে কাটানো সময়গুলো যে স্বপ্নের মতো বলার কারণ ব্যাখ্যা করে ক্ষমা চাইলো হালিমা।যা সচরাচর সবাই বলার সাহস করে না।
এতে হালিমাকে আরতুগুলের সাফ জবাব, রাজপ্রসাদে কাঠানো সময়ের চেয়ে যে আমাদের যাযাবর বসতিতে কাটানো সময়গুলোতে যে ভালবাসা তুমি হালিমা খোঁজে পেয়েছো, তাই নিজেকে ধন্য মনে হয়। সারা পৃথিবী আমার বিরুদ্ধে গেলেও আমি তোমার মুখের হাসি চিনিয়ে নেব না হালিমা।
হালিমারও জানিয়ে দেয়, আমি নিজের জীবন থেকে অনেক কিছুই হারিয়েছি, আমার এতো কষ্ট লাগে নি, যে কষ্ট তোমাকে হারানোর ভয়ে এখন পাচ্ছি। আমার বাবা আর ছোট ভাইকে শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করে বসতিতে নিয়ে আসবে বলে আমার বিশ্বাস।কথা দাও, তুমি সহ আমার বাবা আর ভাইকে নিয়ে ফিরবে।
আরতুগুলও জানিয়ে দেয়, আমি যদি না ফিরে আসি তাহলে তুমি বুঝবে, আমার মনের যেটুকু অভাব ছিল সেটুকু তোমার মধ্যে পেয়েছি।মানে, তোমার জন্য আমি আরতুগুল নিজের জান দিতে প্রস্তুত। কি অবাক করা বিষয় তাই না? যারা এখনো একে অপরকে স্পর্শও করে নি, শুধু চোখের ঐ চাহনীতেই ভালোবাসাটা প্রকাশ করে দুজনেই।
বসতিকে শত্রুদেরকে কাছ থেকে বাচাতে হালিমার বাবা, ভাইকে চেয়ে বসে শত্রুপক্ষ। আরতুগুলের বিচক্ষণ বুদ্ধি দিয়ে তাদের উদ্বার করতে চলে যায়, বসতিতে ঘটে যায় আরো বড় ঘটনা। হালিমার তাবুতে হামলাসহ আরো অনেক কিছু।
অনেক বড় যুদ্ধ থেকে বাচিয়ে আরতুগুল ঠিকঠাকভাবে নিজের বাবা,ভাই, হালিমার বাবা,ভাইকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। এদিকে বসতিতে হালিমার উপর হামলার ঘটনা শুনে আরতুগুল রেগে গেলেও হালিমা রাগ পুষে না রেখে সবাইকে ক্ষমা করে দিয়ে সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখান আরতুগুলকে, বড় মনের পরিচয় দেয়ায় এতে আরতুগুল হালিমার উপর আরো বেশি মুগ্ধ হয়।
এবার বিচ্ছেদের পালা-
হালিমা, তার বাবা ও ভাই আরতুগুলদের বসতি ছেড়ে চলে যাবে রাজপ্রসাদে। যাওয়ার আগে আরতুগুল হালিমাকে ভালোবাসার নির্দেশন হিসেবে সুন্দর একটা ঘোড়া উপহার দেয়। উপহারটাকে সারাজীবন নিজের কাছে অমূল্য উপহার হিসেবে নিজের কাছে রেখে দিবেন বলে প্রমিজ করে হালিমা।এভাবেই হাসি-হারানোর ভয়-দুঃখ- সব কিছু মিলিয়ে আগাতে থাকে নির্মল প্রেমটা।হালিমাদের চলে যাওয়াটাকে আরতুগুল মেনে নিতে পারছিলেন না, কারণ আরতুগুলকে চটপট করতে দেখে একজন যোদ্ধা পরামর্শ দেয় যে, আরতুগুল তুমি তোমার মন যা বলছে তাকে প্রাধান্য দিয়ে আঁকড়ে ধরো, হারিয়ে যেতে দিও না। নিজের ভালোবাসাকে পেয়ে হারিয়ে যেতে দিও না, হারিয়ে গেলে আবার ফিরে পাবে না।
হালিমা রাজপ্রসাদে চলে যাওয়ার পথে আরতুগুলও হালিমার সঙ্গী হয়।পথে বিপদও আসে। হালিমার বিপদের রক্ষকও হয়। হালিমাকে রক্ষাও করে।
যাওয়ার পথে বিশ্রাম নেওয়ার বিরতীতে আরতুগুল হালিমাকে একান্তে কিছু কথা বলে, হালিমা আমি একটা হরিন শিকার করতে গিয়ে তোমাকে পেলাম, এবং তোমার শিকার হয়ে গেলাম।তোমার চোখে আমার জন্য ভালোবাসা খোঁজে পেলাম। আমার সুলতানা হয়ে থাকার প্রস্তাব করছি তোমাকে, কবুল করো, আমাকে একা করিও না।আমার নিষ্পাপ ভালোবাসাকে না বলিও না। আরতুগুলের কথার জবাবে হালিমা বলে, যে রাজপ্রসাদে জন্ম নিয়েছি সে রাজপ্রসাদেই থাকতে পারলাম না, সে সিংহআসনেই বসতে পারলাম না। তোমার হ্রদয়ের সিংহআসনে কেমনে বসি?
হালিমা আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে, আমার ভালোবাসার জন্য তো আমার বাবা-ভাইকে ছেড়ে দিতে পারি না। আগে আমার পরিবার। তারপরে আমার ভালোবাসা। এই সব বলতে বলতেই শত্রুদের আক্রমন শুরু হয়। আরতুগুলের উপর তেড়ে আসা তীর হালিমা নিজের বুক পেতে নেয় এবং আহত হয়, হালিমা। কেন নিজের বুক পেতে নিয়ে বিপদকে নিজের করে নিলে হালিমা? এতে হালিমার সোঝা জবাব ছিল, দুই মনের মিলন সম্ভব না হলেও দুই আত্মার মিলন সম্ভব, তাই নিজের বুক পেতে দিয়েছি আরতুগুল। আরতুগুল,হালিমা, হালিমার বাবা আলেপ্পো শহরে পোছাতে পারলেও হালিমার ভাই, আর আরতুগুলের এক বন্ধু তারগুত পৌছাতে পারে নি। বন্ধী হয় তারা।
আলেপ্পো শহরে পোছার পর হালিমার চিকিৎসা চলতে থাকে, এতে একপর্যায়ে হালিমার উচ্চ চিকিৎসার দরকার হয়।এ কারণে আলেপ্পো শহরের রাজ প্রসাদে নিয়ে যাওয়া হয় হালিমাকে। ঘটনার মোড় নিতে থাকে অন্যদিকে। আরতুগুলের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন হালিমার ভাই ও নিজের বন্ধুকে রক্ষা করতে নিতে হয় নতুন চ্যালেঞ্জ। সময়ের পটপরিবর্তনে আরতুগুলও বন্ধী হয়। বলা যায় সবচেয়ে বড় কঠিন পরীক্ষায় পড়েছে আরতুগুল। প্রাণ যায় যায় অবস্থা থেকেও ফিরে এসেছে আরতুগুল।আলেপ্পো শহরে, নাইটদের এবং আমির এল আজিজের গভীর ষড়যন্ত্রের স্বীকার হন হালিমা, তার বাবা ও আরতুগুল।
আরতুগুলের প্রিতমা হালিমাকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে যায় আলেপ্পো শহরের আমির “এল আজিজ”। হালিমার তার ভাইকে উদ্ধার করে দেয়ার বিনিময়ে হালিমাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয় আমির এল আজিজ।হালিমার বাবা ক্ষমতা আর সম্পদের লোভে পড়ে বিয়েতে মেয়ে হালিমাকে রাজি করায়।হালিমা আরতুগুলের প্রেমে হাবুডুবু খেতে থাকলেও অনিচ্ছা সত্যেও বিয়েতে হালিমা রাজি হয়। পরিস্থিতিতির স্বীকার হয়ে হালিমা সুলতানাও বিয়েতে রাজি হয়ে যায়।আর ক্ষমতা আর সম্পদের লোভের কাছে হেরে যাচ্ছে এক নিষ্পাপ ভালোবাসা। হালিমার বাবা ক্ষমতা আর সম্পদের লোভে পড়ে আরতুগুলের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে আরতুগুলকে সাফ জানিয়ে দেয়- হালিমার জীবন থেকে দুরে সরে যাওয়ার জন্য।সে ভুলে গেল অতীতের সব উপকারের কথা। পরবর্তীতে হালিমার ছোট ভাই বুঝতে পারে যে, এল আজিজকে বিয়ে করার বিনিময়ে বড় বোন কাজটা ঠিক করেনি, বিয়ে নিয়ে যড়যন্ত্র হালিমা সুলতানা পরে বুঝতে পারলেও বাবা বুঝতে চাই নি।
আরতুগুল সবকিছুর বিনিময়ে হালিমাকে চাই, এবং বিয়েও করতে চাই। কথায় আছে না? প্রথম প্রেম ভুলা যায় না, সাধারণত আরতুগুল নিজের ভালোবাসার কথা কাউকে প্রকাশ করতো না।আরতুগুল দৈর্য্যের পরীক্ষা দিতে থাকলো আর কষ্টের জীবন পার করছিল।কৌশল করতে লাগলো, হালিমাকে কিভাবে আলেপ্পোর রাজপ্রসাদ থেকে কিভাবে উদ্ধার করা যায়।
পরবর্তীতে হালিমা সুলতানা আরতুগুলকে এই বলে আশ্বস্ত করে যে, এ বিয়ে আমি করতে চাই না। বিয়ে হওয়ার আগে মুহূর্ত অব্দি অপেক্ষা করবে সে, আরতুগুল না আসলে মৃত্যুকে সাদরে গ্রহন করবে। আরতুগুলও জানিয়ে দেয় যে, সারা পৃথিবী এক হয়ে গেলেও কেউ আলাদা করতে পারবে না। পুরো পৃথিবী এক হয়ে বাঁধা দিলেও আমরা কখনো আলাদা হবো না। আমি তোমাকে উদ্ধার করতে আসবো, যদি না আসি মনে রাখবে, তোমার জন্য লড়াই করতে করতে আমার সাথে আজরাইলের সাথে দেখা হয়ে গেছে।
ফলয়াফল, হালিমা সুলতানা ও আরতুগুল দুজনেই কষ্ট পেতে থাকে আর বিভিন্ন যুদ্ধ ও রাষ্ট্রীয় কাজ এর মাঝেও আরতুগুল হালিমাকে উদ্ধারে সব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এরই মাঝে এল আজিজের বোন আরতুগুলের প্রেমে পড়ে যায়,
হালিমার বিয়ের দিন হালিমার বাবা হালিমাকে বিয়ের সাঝে সাজিয়ে দিয়ে বলে- সুখে থাকো হালিমা। হালিমার জবাব- এটা বিয়ের সাঝিয়ে দাউ নাই বাবা, এটা আমাকে কাফনের সাঝে সাঝিয়ে দিলে বাবা।
আকদ অনুষ্ঠানে আমির এল আজিজ হালিমাকে স্ত্রী হিসেবে কবুল করলেও হালিমা সুলতানা না বলে দেয়ায় ঘটনার মোড় নেয় নবরূপে।
হালিমা সুলতানা আমির এল আজিজকেকে বিয়ে না করলেও জোর করে পারিবারিক নিয়ম মেনে শিকারে নিয়ে যায়। পথে হালিমা সুলতানাকে উদ্ধার করতে গেলে আরতুগুল বন্ধী হয়, ফাসির কাস্টে নিয়ে গেলেও কৌশলে সে মুক্ত হয় কঠিন এক পরীক্ষা দিয়ে।হালিমা সুলতানা খুশি হয়ে আরতুগুলকে বলে- তুমি আজ প্রমান করলে ‘মৃত্যুও ভালোবাসাকে আলাদা করতে পারে না”
কঠিন সব পরিস্থিতি জয় করে আরতুগুল হালিমা সুলতানাকে নিয়ে কায়ী বসতিতে ফিরে আসে। সবাই খুশি হলেও আরতুগুলের ভাবি ও ছোট বোন নারাজ হয়ে গেলেন।
দীর্ঘদিন পরে চোখে চোখ রেখে হাসিমুখে আরতুগুল-হালিমার কথোপকথনঃ
- তুমি রাজপ্রসাদ এর সুলতানা হয়ে থাকতে পারতে, কিন্তু রাজপ্রসাদ এর সুলতানা না হয়ে যাযাবর বসতিতে চলে আসলে কেন? এখানে থাকতে চাইলে কেন?
- তোমার সাথে আমি যেখানে থকবো সেটাই আমার রাজপ্রসাদ।আমি তোমার হ্রদয়ের সুলতানা হতে চাই, তোমার সাথেই আমি সারা জীবন থাকতে চাই।
- আমিও চাই তুমি আমার সাথে থাকো। কিন্তু এক দিন এই বসতি ছেড়ে চলে যেতে হবে। পারবে কি? তখন কষ্ট হবে কি?
- আমি তোমার সাথে, তোমার জন্য পৃথিবীর সব কিছুই ছাড়তে পারি। এমন কি পৃথিবীর শেষ প্রান্তেও যেতে রাজি আছি! জানতেও চাইবো না তুমি কোথায় নিয়ে যাচ্ছ আমাকে।
- সব ছেড়ে দিয়ে আমি যাকে ভালোবাসি তাকে নিয়েই বাচবো, হালিমা।
শত ঝামেলা আর যড়যন্ত্রের মাঝেও হালিমা আর আরতুগুলের প্রেম চলতেই থাকে। রিলাক্সের জন্য প্রায় সময় ঘোরতে বের হতো ওরা। আর শত কষ্টের মাঝেও একে অপরের মাঝে সুখ খোঁজে পেতো, সুখ খোঁজে পেতো ঐ চোখের চাহনীতে।
এরই মাঝে আরতুগুলের মা-বাবা যে মেয়েরকে আরতুগুলের বিয়ের জন্য ঠিক করেছিল, সে আহত হয় এবং বাচ্চার মা হতে পারবে না বলে জানাজানি হয়ে যায় এবং সে হালিমা-আরতুগুলের বিয়ে দিতে অনুমতি দিয়ে দেয়।এই বিয়ের খুশির খবর পেতে না পেতেই সাথে সাথে দুঃসংবাদ হাজির হালিমার জন্য, হালিমার ভাইকে নাইটরা তুলে নিয়ে যায়।অপহরণ করে নিয়ে যায়। সব কষ্টের মাঝেও আরতুগুলের ভালাবাসাতেই যেন খোজে পায় সুখ আর আনন্দ।
আরতুগুলের মা-বাবা হালিমাকে গলার হার উপহার দেয়ার মাধ্যমে বিয়ের ঘোষণাকে বাস্তবে রূপ দান করে। আমার ভাগ্য আর তোমার ভাগ্য একহালিমাকে আরতুগুল। তুমি চিন্তা করো না, আমি তোমাকে সবসময় হাসিমুখে চাই। এর জন্য যতকিছুই করতে হবে তার সবই করবো।
আবার বিপদ, আরতুগুলের পুরা পরিবার আর হালিমা আবারো যড়যন্ত্রের শিকার হয়ে আলাদা হতে বাধ্য হয়। নেমে আসে কঠিন কালো-মেঘ। আরতুগুলের কিছু গোপনীয়তা রক্ষা করতে হালিমাকে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়, কঠিন সে মুহূর্তেও আরতুগুলের জন্য নিজেকে ২বার নিজের প্রাণ দিতে রাজি ছিল। তবুও যেন আরতুগুলের ক্ষতি না হয়।
কঠিন কালো-মেঘ কেটে যায়, সবার দেখা হয় আবারো, দেখা হয় ভালোবাসার।মৃত্যুই মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে- হালিমার সরল স্বীকারোক্তি। অবশেষে, ১০ দিরহাম স্বর্ণমুদ্রা আর ২০টা বেড়া দেনমোহরের বিনিময়ে হালিমা আর আরতুগুলের বিয়ে হয়। পাখির মতো লতা পাতা দিয়ে নয়, হালিমা আর আরতুগুল বাসা বাধলো ভালবাসা দিয়ে। আহ! দুজনের চাওয়া আর চাওয়া রইল না, পাওয়া হয়ে গেলো।
চোখ যে মনের আয়না, এ কথা যেন এ সিরিয়ালের প্রতিচ্ছবি। আরতুগুল-হালিমা সুলতানার ভালবাসার হিস্ট্রি। আরতুগুলের কাছে হালিমার একমাত্র ভাইয়ের চাওয়াটা ছিল ঠিক এ রকম-আপনার তালোয়ার খারাপের জন্য আর ভালোবাসা আমার বোনের জন্য। কি চমৎকার কথা তাই না?
বাসর রাতে হালিমার অনেক চাওয়া মধ্যে একটা ছিল- আমার জন্য হলেও সাবধানে থাকবে… আরতুগুল।সাথেহালিমার সবসময়ের চাওয়া-
“রোধে যেন পুড়তে না হয়,
বৃষ্টিতে যেন ভিজতে না হয়,
মাঠিতে যেন পা পেলতে না হয়,
পাথর যেন পথ না আগলায়,
দ্রুত গিয়ে ফিরে আসুন আরতুগুল”।
হালিমার কঠিন সময়ে যারা হালিমাকে টিটকারি করতো, অপমান করতো, সবাইকে ক্ষমা করে দিয়ে হালিমা সবাইকে আপন করে নিয়ে আরতুগুলের সাথে সংসার করতে লাগলো।যে হালিমাকে বিয়ে করতে উম্মাদ ছিল আলেপ্পোর আমির এল আজিজ, সে পর্যন্ত আরতুগুলক মূল্যবান উপহার দিয়ে আরতুগুলের কাছের মানুষ হয়ে উঠলো। দুজনেই ভালোবাসা দিয়ে জয় করলো সব কিছু। এবাবেই শেষ হল “দিরিলিস আরতুগুল” এর প্রথম সিজন মানে ৪৫ মিনিটের ৮১টি পর্ব।
পরিশেষে বলতে হয়, মনের আবেগ ও অনুভূতির সমষ্টিই ভালোবাসা। যা দেখা যায় না, ধরাও যায় না কিন্তু অনুভব করা যায়।মুখের কথা, চোখের ইশারার মাধ্যমেই প্রকশ পায় সব। ভালোবাসা হচ্ছে কারো প্রতি অতিরিক্ত স্নেহের বহিঃপ্রকাশ। সেটা হয় দুজন দুজনের প্রতি অথবা একজন অন্যজনের প্রতি। এভাবেই দিরিলিস পরিচালক অনেক পুরনো ভালোবাসার এক কাহীনীকে ফুটিয়ে তুলেছেন বাস্তব প্রাণ দিয়ে।
মোরাল অফ দ্যা লাভ হিস্ট্রি অফ “আরতগুল-হালিমা সুলতানা” হল- যে প্রম/ভালোবাসা মনের গভীর থেকে হয়, সে প্রেম হয় নিখুঁত ভালোবাসাময়।যে প্রেমে/ভালোবাসায় অবহেলা থাকে সেটা কখনোই নিখুত/শতভাগ হয় না।যে প্রেমে/ভালোবাসায় সন্দেহ থাকে সেটা ভালবাসাই না। যে যে প্রেম/ভালোবাসা শুধুই মনের গভীর থেকে হয়, সেটাই আসল ভালোবাসা। যেখানে থাকে না অবিশ্বাস, অবহেলা, সন্দেহ।
ভালোবাসা, নরম তুলোর মত আবেগে মোড়ানো, ভাষায় প্রকাশ করতে না পারা স্পর্শকাতর এক তীব্র অনুভূতির নাম। রঙ, রূপ, গন্ধবিহীন এই তীব্র অনুভূতির এক অদ্ভুত ক্ষমতা আছে, আর সেটি অপরের প্রতি তীব্র আকর্ষণ। এই আকর্ষণের শক্তি এতটাই প্রবল যার টানে অপরকে পাশে পেতে ছুটে যায় বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে, জয় করে সকল প্রতিকূলতাকে, ব্যস্ততা, ক্লান্তি ভুলে প্রিয়জনকে কাছে গিয়ে বলে “ভালোবাসি, ভালোবাসি...’’
কখন, কীভাবে, কোন মুহূর্তে ভালোবাসা মানুষকে ছুঁয়ে যায়, তা হয়তো সে নিজেও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারে না। কোন বাধায়, শাসনে তাকে আটকে রাখা যায় না, ভালোবাসা আসবেই।বাংলার কবি হেলাল হাফিজের কবিতার ভাষায়,“কোনদিন, আচমকা একদিন ভালোবাসা এসে যদি হুট করে বলে বসে,-‘চলো যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাই’,যাবে?’’
শুধুমাত্র আরতুগুল ও হালিমা সুলতানার নিখুঁত ভালোবাসার পার্টটি নিয়ে লিখলাম,বাকিগুলো অনযদিন হবে।
দিরিরিস দেখে অনেক কিছুই শিখার আছে, দিরিলিসে হালিমা সুলতানা আর আরতুগুলের যে প্রতিজ্ঞা সেটাই হল নিখুঁত ভালোবাসা।ভালবাসতে শিখো, ভালবাসা দিতে শিখো। তাহলে তোমার জীবনে ভালবাসার অভার হবেনা। অপেক্ষা হলো শুদ্ধতম ভালোবাসার একটি চিহ্ন। সে অপেক্ষা কতই না মুধুর। লিখতে গেলে অনেক কিছুই লেখা যাবে আর না , অন্য দিন ………………… কেমন?
বাস্তবে রিয়েল লাভের ফিল পেতে হলে, নিখুঁত ভালোবাসা, আবেগ-অনুভূতি,অপেক্ষা সব পেতে হলে আপনাকে দিরিলিস দেখতেই হবে।
উল্লেখ্য যে, তুর্কি সিরিয়াল Diriliş: Ertuğrul বিশ্বব্যাপী সমাদৃত এমনই একটি সিরিয়াল। তুরস্কে জনপ্রিয়তা লাভের পর বিশ্বের বিশটিরও বেশী দেশে এটি প্রদর্শিত হয়েছে। ইংরেজি, রুশ, আরবী, ফারসী, উর্দু, বাংলা, মালয় সহ বিভিন্ন ভাষায় এটি অনুদিত হয়ে সাব-টাইটেল বা ডাবিং এর মাধ্যমে এটি প্রদর্শিত হয়েছে। Diriliş: Ertuğrul- হল মেহমেত বোজদাগ ও কেমাল তেকদেন কর্তৃক নির্মিত একটি তুর্কি ঐতিহাসিক অ্যাডভেঞ্চার টেলিভিশন ধারাবাহিক নাটক।
.
রিভিউ লিখেছেনঃ মিহির মিশকাত
দিরিলিস আরতুগ্রুল বাংলা রিভিউ
Reviewed by Tottho Projukti
on
January 13, 2020
Rating: