আমেরিকার চাপে মাথা নত করিনি, ভবিষ্যতেও করবোনা -এরদোয়ান
তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার দুই মন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিশোধ নিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের দুইজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন যা ন্যাটোর এই দুই বন্ধু দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি করেছে। "যারা চিন্তা করে, তুরস্কের ওপর উপহাসজনক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে পার পেয়ে যাবে তাদের আমাদের দেশ এবং আমাদের জাতি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই" এরদোয়ান আঙ্কারাতে এক ভাষণে এসব কথা বলেন। নিউইয়র্ক টাইমসের মাধ্যে এই খব প্রকাশ হয় তিনি বলেন, "আমার কখনো চাপের মুখে আমাদের মাথা নত করিনি এবং ভবিষ্যতেও করবোনা!"
প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আরো বলেন, নিজ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তার তুরস্কে থাকা সম্পদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাদেরকে "যুক্তরাষ্ট্রের বিচার এবং অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী" বলে বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। এ রকম আদেশের বেশীর ভাগই প্রতীকী। তুরস্কে যুক্তরাষ্ট্রের ওই দুই কর্মকর্তার আদৌ কোনো সম্পদ রয়েছে কিনা এতে তা পরিষ্কার করা হয়নি। ২১ মাস পূর্বে সন্ত্রাসীদের সাথে আঁতাত করার দায়ে আটক হওয়া যাজক এন্ড্রু ব্রান্সনকে মুক্তি দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বারবার আহ্বান জানায়। যিনি তুরস্কের ইজমির শহরে ইভানজেলিকাল রেজারেকসন চার্চ নামে একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্ররিচালনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জানায়, ব্রান্সনের আটককে উদ্দেশ্যমূলক আখ্যা দিয়ে কয়েকজন সিনেটরের সাথে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও যাজক ব্রান্সনের ব্যাপারটি নিয়ে তাদের দেনদরবার চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই বিষয়টিকে ব্যক্তিগতভাবে নিয়েছেন এবং এবিষয়ে এরদোগানের সাথে টেলিফোনে আলোচনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়াতে কুর্দি সন্ত্রাসীদের সহায়তা, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক তুর্কি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতা ফেতুল্লাকে তুরস্কে প্রেরণে অস্বীকার সহ আরো কারণে ব্রান্সনের বিষয়টি উভয় দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।
যাজক ব্রান্সনসহ বিশ জনের মত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও যুক্তরাষ্ট্রের তিনজন কর্মচারী তুরস্কের কারাগারে আটক থাকাকে তুরস্কের বৈরী কূটনীতি আখ্যা দিয়ে দেশটির প্রতি ওয়াশিংটন রাগান্বিত হয়েছে। এই বৈরিতার আরেকটি দিক হচ্ছে রাশিয়া থেকে তুরস্কের মিসাইল ব্যবস্থা ক্রয় করা যা ন্যটোর মুখের উপর দিয়ে তুরস্কে উড়ে এসেছে। এরদোয়ান যিনি জুন মাসে পুনঃনির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় এসছেন এবং নতুন ক্ষমতার অধিকারী হয়েছেন তিনি দেশটিতে জাতীয়তাবাদী এবং যুক্তরাষ্ট্র বিরোধী প্রচারণা চালিয়ে তার জনপ্রিয়তা বজায় রেখেছেন। তিনি তুরস্কের অর্থনৈতিক দৈন্যদশার জন্য বিদেশী ষড়যন্ত্রকে দায়ী করেন কিন্তু কয়েকজন রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মতে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সাথে তার তুরস্কের মিত্রতার অবসান চান। আদেশ জারি করার পর ব্রানসনের ব্যাপারে দুই দেশের দর কষাকষির অবসান হচ্ছে না বলে মনে হচ্ছে। এ ব্যপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবাদের পর ব্রানসনকে কারাগার থেকে গৃহ বন্ধি করে রাখা হয়েছে।
আমেরিকার চাপে মাথা নত করিনি, ভবিষ্যতেও করবোনা -এরদোয়ান
Reviewed by Khalilur Qaderi
on
October 23, 2018
Rating: