সুমধুর আজানের কন্ঠে বিমোহিত হয়ে ইসলামের ছায়াতলে খ্রিস্টান নারী তাটিনা ফাতিমা
সুমধুর আজানের কন্ঠে বিমোহিত হয়ে ইসলামের ছায়াতলে খ্রিস্টান নারী তাটিনা ফাতিমা:
তাটিনা ফাতিমা, স্লোভাকিয়ায় জন্ম নেয়া খ্রিস্টান নারী। বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়ানো ছিল তার শখ। এভাবে বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়ানোর পথে মসজিদ ও মুসলিমদের সান্নিধ্যে আসেন তিনি। আজানের সুমধুর ধ্বনি, একত্রে মুসলিমদের নামাজ আদায়, মুসলিম সংহতি, আরবি ভাষা তাকে দারুণভাবে বিমোহিত করে। এরপর থেকেই মহান আল্লাহর প্রতি তার ভালোবাসা ও বিশ্বাস জন্মাতে থাকে। তার মনে দৃঢ় বিশ্বাস ছিল, সৃষ্টিকর্তা নিশ্চয় তাকে তার ইঙ্গিত দেখাবেন। তার এ দৃঢ় বিশ্বাস তাকে একসময় সফল করে। দেখা পান আল্লাহর কাঙ্ক্ষিত সেই নিদর্শন। যে নিদর্শন তার জীবনের মোড়কে ঘুড়িয়ে দেয়। মুসলিম হওয়ার জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা অনুভব করেন এবং আল্লাহ তার এ আকাঙ্ক্ষাকে কবুল করেন।
তাটিনা ফাতিমার ইসলামের পথের যাত্রার কাহিনীর বাকিটা শুনুন তার মুখেই-আল্লাহর প্রতি আমার যথার্থ ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে লক্ষ লক্ষ শব্দের ব্যবহারও আমার কাছে যথেষ্ট মনে হয় না। নামাজের মধ্য দিয়ে আমি আমার প্রভুর সাথে কথা বলি। এটি হচ্ছে আমার গভীর, আন্তরিক অনুভূতি যা আমার হৃদয়ের গভীর থেকে আসে এবং তা আমার শরীরের প্রতিটি অংশে প্রবাহিত হয়। আমার প্রতি আল্লাহর অসীম দয়া এবং আমাকে একজন মুসলিম হওয়ার সুযোগদানে তার প্রতি আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। আমার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহের জন্য আমাকে আমার সমস্থ জীবনে তার প্রশংসা এবং তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে। ইসলামের পথে আমার যাত্রা শুরু হয় অনেকটা অগোচরে এবং সাদামাটাভাবে।
শুরুর কথা মনে হলে আমার এখনো হাসি পায়। আমি আমার পিতামাতার সঙ্গে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করতে পছন্দ করতাম। আমি আমার বাবা-মায়ের সাথে বিভিন্ন মুসলিম দেশে ভ্রমণ করেছি।মিশর ছিল আমাদের ভ্রমণের সর্বশেষ একটি দেশ। মিশরের সবকিছু, বিশেষকরে তার সংস্কৃতি দারুণভাবে আমার মনযোগ আকর্ষণ করে। মিশরে গিয়ে প্রথমবারের মত আমি মসজিদের সান্নিধ্যে আসি। কিন্তু তখনো আমি মসজিদের ভিতরে প্রবেশ করিনি। আমি কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছিলাম-একজন অমুসলিম হিসেবে আমি এর ভিতরে প্রবেশ করতে পারি কিনা না। আমি মসজিদটি থেকে আজানের সুমধুর ধ্বনি শুনতে পেলাম। এটি শোনা মাত্রই আমার হৃদয় কেঁপে ওঠে এবং আমি আবেগাচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। আমি মিনার থেকে ভেসে আসা এ সুমধুর ধ্বনি ছাড়া আর কিছুই শুনতে পাইনি। আজান আমাকে পুরোপরি বিমোহিত করে তোলে। মসজিদে জমায়েত হওয়া এবং একসঙ্গে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে যে সংহতি আমি দেখেছি তা আমাকে বিমুগ্ধ করে এবং এই মধুর দৃশ্য আমার স্মৃতিতে চিরভাস্বর হয়ে আছে। সেখান থেকে ফিরে আসার সময় আমার কাছে কেবলই মনে হয়েছে আমি আমার খুবঘনিষ্ঠ কোনো কিছু রেখে যাচ্ছি। ওই সময় ইসলাম সম্পর্কে আমি সামান্য কিছু জানতাম। কিন্তু এখন যতটুকু জানি সে তুলনায় সেটি ছিল একেবারেই নগণ্য। আরবি ভাষা আমাকে এতটাই আকর্ষণ করে যে, বাড়িতে ফিরে আসার পর আরবি শেখার জন্য আমার মনে ব্যাকুলতা শুরু হয়। এটিকে আমার কাছে মনে হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ভাষাগুলোর মধ্য শ্রেষ্ট। কিন্তু আমার শহরের স্কুল-কলেজগুলোতে আরবি ভাষা শিক্ষার কোনো কোর্স ছিল না। এখানে শুধু ইংরেজি এবং জার্মান কোর্স শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে। ফলে আরবি শেখার জন্য আমার ভিতর যে তীব্র উত্তেজনা কাজ করছিল নিমেষেই তা হতাশায় পরিণত হয়। এভাবে কিছু সময় অতিবাহিত হয় এবং আমি ধীরে ধীরে ইসলামের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করি। আমি বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ইসলাম সম্পর্কিত বিভিন্ন লেখা পড়তে শুরু করি। আমি ইসলাম ও মুসলমান সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরণের টিভি প্রোগ্রাম দেখতে থাকি। আমি ইন্টারনেটে মুসলিম মহিলাদের একটি আলোচনা ফোরাম অনুসরণ করি। আমি তাদের এই আলোচনা ফোরাম হতে অনেক কিছু শিখেছি।সেখানে আলোচকদের মধ্যে কিছু স্লোভাক নারীও ছিল। স্লোভাকিয়ার কসিস থেকে এক বোন আমাকে জানান যে, সেখানে আরবি এবং কুরআন শেখার ব্যবস্থা আছে।
আমরা একসাথে আরবি এবং কুরআন পাঠের তালিম নেই এবং সেইসাথে আমি অন্যান্য মুসলিম মেয়ে এবং নারীদের সাথে পরিচিত হই।আমি পাঠগুলোতে নিয়মিত উপস্থিত ছিলাম এবং এরমধ্যে কুরআন পাঠ আমাকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে এবং আমি এর মধ্যে কয়েকটি সুরাও শিখে ফেলি। সেখানে আমি একজন অমুসলিম হওয়া সত্ত্বেও, সবাই ছিল আমার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সহনশীল। কয়েক মাস পর আমাদের আরবির পাঠ শেষ হয়। কিন্তু এরপরেও আমরা সবাই একত্রিত হয়েছি। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলাপ আলোচনা করতাম। তাদের জীবনধারা প্রত্যক্ষ করার উদ্দেশ্যেই আমি বেশি বেশি তাদের সাথে মিশতে চাইতাম। আমি একজন মুসলিম হতে চেয়েছি কিনা তা আমার কাছে পরিষ্কার ছিল না। আমি আমার বিশ্বাস পরিবর্তন করাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করতাম না। আমার কাছে যে জিনিসটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সেটি হলো আল্লাহ সম্পর্কে জানা এবং তাকে ভালোবাসা।আমি আমার মুসলিম বোনদের কাছে জানতে চাইলাম কিভাবে আমি আল্লাহর ইঙ্গিত পেতে পারি। তারা সবসময় আমাকে বলত, ‘তোমার বিশ্বাস অবশ্যই তোমাকে এক দিন আল্লাহর ইঙ্গিত দেখাতে সহায়তা করবে। আর সেটি হবে নিদির্ষ্ট একটি অনুভূতি যাকে কোনো কিছু দ্বারা বিভ্রান্ত করা যাবে না।’আমিও তাই অপেক্ষায় থাকি....
আমার পরিবার খ্রিস্টান হলেও ধর্মের ব্যাপারে আমাকে কেউ কোনো নির্দেশনা দেয়নি। আমার মা আমাকে বলত যে, আমি এই ক্ষেত্রে পুরোপরি স্বাধীন। আমি যতটা সম্ভবমন থেকে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি এবং তার কাছে চেয়েছি তিনি যেন আমাকে তার নিদর্শন দেখান এবং তার ইচ্ছায় তিনি যেন আমাকে একজন মুসলিম হওয়ার সুযোগ দেন। গ্রীষ্মের ছুটিতে আমি আমার নানুর সাথে কিছু সময় অতিবাহিত করি। নানু বাড়ি হতে বাড়ি ফেরার পর আমার হৃদয়ে পালাবদল শুরু হয়। আমি এক বিশেষ অনুভূতি অনুভূত করতে পারি। এটি হঠাৎ করেই এবং অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই এসেছিল।তখন আমি আমার মুসলিম বোনদের কথা স্বরণ করি। কেননা তারা আমাকে বলেছিল, ‘তুমি একদিন এটি অনূভব করতে পারবে। আল্লাহ তোমাকে তার নিদর্শন নিশ্চয় দেখাবে।’আমি এই অনুভূতির কথা কখনো ভুলতে পারব না। শিশুরা যেমন কোনো কিছু পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে, এরপর আমিও অনেকটা শিশুদের মত হয়ে যাই। আমি মুসলিম হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা অনুভব করি। আমি তখন অনুভব করতে পারি যে, আমার প্রতিটি চিন্তা, আমার প্রতিটি কাজের মধ্য আল্লাহ রয়েছেন। আমি আল্লাহর সত্যকে এবং তার ক্ষমতায় বিশ্বাস করি যা তিনি হযরত মুহাম্মদ (সা.) মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। হঠাৎ করেই আমার সব অবিশ্বাস দূর হয়ে যায়। আমি জানতাম আমার সিদ্ধান্তই সঠিক ছিল এবং আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন কেন? আমি এটির সঠিক ব্যাখ্যা করতে পারব না। আপনি কেবল এটি জেনে রাখেন, আমি আমার সত্যকে খুঁজে পেয়েছি।আমি আমার প্রিয় বন্ধু,আমার মুসলিম বোন যার সাথে আমি প্রথম সাক্ষাৎ করি এবং যিনি আমাকে অন্য সবার চেয়ে বেশি সহায়তা করেছে, তাকে বিষয়টি অবহিত করি। ওই একই দিনে আমি তার এবং অন্য মুসলিম মহিলার উপস্থিতিতে কালেমা শাহাদা পাঠ করার ঘোষণা দেই।আমার এই ঘোষণায় তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরেন। আমার কাছে মনে হল যেন নতুন কোনো ব্যক্তি আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। যেন আমি আমার অতীতের সবকিছু ধুয়ে-মুছে, পূত-পবিত্র হয়ে পুনরায় নতুন করে জন্ম নিয়েছি এবং কুরআন ও নবীর সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালিত করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে গেছি। (সংগ্রহিত খবর)
আমার পরিবার খ্রিস্টান হলেও ধর্মের ব্যাপারে আমাকে কেউ কোনো নির্দেশনা দেয়নি। আমার মা আমাকে বলত যে, আমি এই ক্ষেত্রে পুরোপরি স্বাধীন। আমি যতটা সম্ভবমন থেকে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছি এবং তার কাছে চেয়েছি তিনি যেন আমাকে তার নিদর্শন দেখান এবং তার ইচ্ছায় তিনি যেন আমাকে একজন মুসলিম হওয়ার সুযোগ দেন। গ্রীষ্মের ছুটিতে আমি আমার নানুর সাথে কিছু সময় অতিবাহিত করি। নানু বাড়ি হতে বাড়ি ফেরার পর আমার হৃদয়ে পালাবদল শুরু হয়। আমি এক বিশেষ অনুভূতি অনুভূত করতে পারি। এটি হঠাৎ করেই এবং অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই এসেছিল।তখন আমি আমার মুসলিম বোনদের কথা স্বরণ করি। কেননা তারা আমাকে বলেছিল, ‘তুমি একদিন এটি অনূভব করতে পারবে। আল্লাহ তোমাকে তার নিদর্শন নিশ্চয় দেখাবে।’আমি এই অনুভূতির কথা কখনো ভুলতে পারব না। শিশুরা যেমন কোনো কিছু পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে, এরপর আমিও অনেকটা শিশুদের মত হয়ে যাই। আমি মুসলিম হওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা অনুভব করি। আমি তখন অনুভব করতে পারি যে, আমার প্রতিটি চিন্তা, আমার প্রতিটি কাজের মধ্য আল্লাহ রয়েছেন। আমি আল্লাহর সত্যকে এবং তার ক্ষমতায় বিশ্বাস করি যা তিনি হযরত মুহাম্মদ (সা.) মাধ্যমে পাঠিয়েছেন। হঠাৎ করেই আমার সব অবিশ্বাস দূর হয়ে যায়। আমি জানতাম আমার সিদ্ধান্তই সঠিক ছিল এবং আপনি যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন কেন? আমি এটির সঠিক ব্যাখ্যা করতে পারব না। আপনি কেবল এটি জেনে রাখেন, আমি আমার সত্যকে খুঁজে পেয়েছি।আমি আমার প্রিয় বন্ধু,আমার মুসলিম বোন যার সাথে আমি প্রথম সাক্ষাৎ করি এবং যিনি আমাকে অন্য সবার চেয়ে বেশি সহায়তা করেছে, তাকে বিষয়টি অবহিত করি। ওই একই দিনে আমি তার এবং অন্য মুসলিম মহিলার উপস্থিতিতে কালেমা শাহাদা পাঠ করার ঘোষণা দেই।আমার এই ঘোষণায় তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরেন। আমার কাছে মনে হল যেন নতুন কোনো ব্যক্তি আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। যেন আমি আমার অতীতের সবকিছু ধুয়ে-মুছে, পূত-পবিত্র হয়ে পুনরায় নতুন করে জন্ম নিয়েছি এবং কুরআন ও নবীর সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালিত করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত হয়ে গেছি। (সংগ্রহিত খবর)
সুমধুর আজানের কন্ঠে বিমোহিত হয়ে ইসলামের ছায়াতলে খ্রিস্টান নারী তাটিনা ফাতিমা
 Reviewed by Khalilur Qaderi
        on 
        
November 08, 2018
 
        Rating:
 
        Reviewed by Khalilur Qaderi
        on 
        
November 08, 2018
 
        Rating: 
 Reviewed by Khalilur Qaderi
        on 
        
November 08, 2018
 
        Rating:
 
        Reviewed by Khalilur Qaderi
        on 
        
November 08, 2018
 
        Rating: 
 

 
 
 
 
 
