খাজা বিক্রি করে বইয়ের দোকানে ছুটে যেতেন এরদোগান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান ছোটবেলা তিলের খাজা বিক্রি করতেন। মুসলিম বিশ্বের অন্যতম এ নেতা নিজেকে অতন্ত্য সাবলিলভাবে উপস্থাপন করেছেন। তুরস্কের বর্তমান নেতা রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান বই লিখেননি, তবে এক নাতিদীর্ঘ সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে তার বইভাবনা। তবে তিনি ভবিষ্যতে বইও লিখতে পারেন। এমন কথারও ইঙ্গিত দিয়েছেন। তুর্কি পত্রিকা থেকে ভাষান্তর করা হয়েছে। আপনার ছোটবেলার প্রিয় উপন্যাস বা কবিতাটির কথা শুনতে চাই। বলুন, কবে আপনি ওটা প্রথম পড়েছিলেন ও কিভাবে তা আপনাকে প্রভাবিত করে।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, আমি নিশ্চিত, প্রতিটি শিশুই সাহিত্যের সঙ্গে পরিচিত হয় ঘুমপাড়ানি গান ও রূপকথার মাধ্যমে। আমার মা আমাদের বড় করে তুলেছেন অ্যানাতোলিয়া ও কৃষ্ণসাগরীয় অঞ্চলের সবচেয়ে সুন্দর ঘুমপাড়ানি গান শুনিয়ে। আমার মরহুম বাবার কাছে শুনেছি আনাতলিয়ার অসংখ্য সুন্দর গল্প ও রূপকথা। আমার মনে আছে, ছোটবেলায় আমি তিলের খাজা বিক্রি করতাম। বিক্রিশেষে যা আয় হতো তা নিয়ে ছুটে যেতাম বইয়ের দোকানে। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, আমার প্রজন্মে বেড়ে ওঠার সময়টি ছিল অস্থির রকমের। নানা জটিল বিতর্ক ও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় পরিপূর্ণ। ওই সময়টায় নানা রকম প্রতীক, স্লোগান ও বিক্ষোভের প্রবল প্রতাপে ভাবধারা /আইডিয়া হারিয়ে যেতে বসেছিল। কবর রচিত হয়েছিল বুদ্ধিমত্তার।
আমরা জানতাম, দৃঢ় ভিত্তি ও স্থির নীতি ছাড়া কোনো আন্দোলনই সফল হতে পারে না। আমাদের খুব জানা ছিল যে, ব্যাপক পড়াশোনা থাকলেই কেবল ভাববিনিময় ও বিতর্ক ফলপ্রসূ হতে পারে। তাই আমরা পড়াশোনার কষ্টকর পথটি বেছে নিলাম। আমাদের সর্বোচ্চ সাধ্যমতো আমরা সেসব লেখকের বই পড়তে থাকলাম, তুর্কি ও বিশ্বসাহিত্যকে যারা পথনির্দেশ দিয়ে এসেছেন। আমি আরও একটা কথা জানিয়ে রাখতে চাই, আমাদের সময়টি ছিল এমন একটি সময়, যখন কোনো বই হাতে পাওয়াটা ছিল খুবই কঠিন। এখনকার মতো তখন এত বই, এত পাঠাগার ছিল না। এখন যেমন অনেক পরিবার বই কেনার জন্য কিছু টাকা বাজেট রাখে, তখন এটা ছিল না। এখন যেমন কাউকে বাসে, পার্কে বা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসে স্বাধীনভাবে বই পড়তে দেখা যায়, এমনটা তখন ভাবাই যেত না।
এমন অবস্থায়ও যখন আমরা কোনো বই হাতে পেতাম, সে বই এহাত-ওহাত ঘুরে কয়েক ডজন তরুণের পড়া হয়ে যেত। তখন ইন্টারনেট ছিল না, ফটোকপি মেশিনও ছিল না, তা সত্ত্বেও যে কোনো মহৎ সাহিত্যকর্ম কিংবা সুন্দর একটি কবিতা হাত থেকে হাতে একেবারে অ্যানাতোলিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে যেত।
খাজা বিক্রি করে বইয়ের দোকানে ছুটে যেতেন এরদোগান
Reviewed by Khalilur Qaderi
on
October 21, 2018
Rating: